Posts

Showing posts from 2021

বিষাদের গুঞ্জন | সামি আল সাকিব

Image
  কী এক অনিশ্চিতের দিকে ধাবমান আমরা! যেমন করে সূর্যের আলো ধরণীর প্রতিটি কোণা আর খাঁজে ছড়িয়ে পড়ে— কেমন এক ব্ল্যাকহোল–আঁধার ক্রমশ অন্ধকারাবৃত করে দিচ্ছে আমাদের প্রত্যেকটা স্থান, কেমন অনিশ্চয়তা আর নিরাপত্তা-অভাব, দোদুল্যতা গ্রাস করে নিচ্ছে আমাদের। মহাশূন্যে ভাসমান উল্কাপিণ্ডের মতো ক’রে ক্রমশই আমরা ধাবমান সে’ই আঁধারের কাছে, আমাদের কাছে ক্রমে সরে আসে আঁধার, আমাদের ক্রমে আবৃত করে, আমাদের কি অনুপস্থিতি আলো’র! আমরা হয়ে উঠি আঁধার–গোলক, আমাদের আয়ু, আগামী কাল, কতটা বিষাদ জমে আছে, কতটা আশাহীন! একঘেয়ে আয়ু নিয়ে আমাদের ছুটে চলা, কতটা বাধ্য হয়ে আমরা ক্রমশ ধাবমান, আঁধার–গোলকের পথে, ধীরে ধীরে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জর্জরিত আঁধার, জড়ায় আরো; তারপর, আমরা হয়ে উঠি সম্পূর্ণ আঁধারে পূর্ণ, সম্পূর্ণ নিমজ্জিত, আমরা এগোতে এগোতে আঁধারের গোলক ছুঁই, গোলকের প’রে কিছু নেই, হয়তো আছে, কি এক অসহ্যতা, দোদুল্যতা, নিরাপত্তা–অভাব, কি নিঃষ্প্রাণ, কতটা একঘেয়ে যন্ত্রণার, আঁধারটা নিশ্চয়ই মৃত্যু, আমরা ক্রমশ ধাবমান, আমাদের জড়িয়ে ধরে, আমরা জড়াই, বাধ্য হয়ে, কতটা অনিশ্চয়তার দিকে ধাবমান আমরা, কতটা নিঃসাড়, কতটা হতবাক হয়ে..             

সমাধিসৌধ | অ-কবিতা | সামি আল সাকিব

Image
  জেনেছি, মৃত্যু হতে এক আয়ু দূরবর্তী আমরা একটা প্রত্যাখান কিংবা ইতি, প্রেয়সীর ফিরিয়ে নেয়া মুখ কিংবা কোনোদিনই বৈপরীত্যে না হাঁটা সময় একটা চুমু, আত্মার সাথে অন্তরাত্মার সঙ্গম, আর রন্ধ্রে রন্ধ্রে সুতীব্র বিষাদ, দেহ-ত্যাগী যন্ত্রণায় আমাদের এক আয়ু ফুরিয়ে যায়, আমার জেনেছি, মৃত্যুর আগে বন্ধক ছাটা হয় চুলের এক-সহস্রাংশ মতো আঁধার গ্রাস করে, মৃত্যুকে, যে বাঁচে, বেঁচে যায় ছায়াতলে, ঠোঁট ছোঁয়ানো জলে জেনেছি মৃত্যু হতে আমার-প্রেয়সীর একটি চুমুর দূরত্ব, ততোটাই জীবন থেকে জেনেছি, মৃত্যু নিয়েই আমাদের বাস, আমাদের হৃদয়ে প্রেয়সীর কাছ থেকে ক্রমশ আবছা হতে হতে ম’রে যাই, জীবন্ত সমাধি ঘটে মানুষ বেঁচে থাকে, তাকে কবরে রাখা হয় জেনেছি, দেহের মৃত্যু নেই, মেয়াদ আছে মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে সমাহিত করা হয়, হয়তো না জেনেছি মৃত্যুর জন্য মরবার প্রয়োজন নেই, সমাধির জন্য মাটি কেউ ম’রে গেলে, হৃদয়ে, অদৃশ্য কবর খোঁড়া হয়, জীবন্ত সমাধি হয় মানুষের তখন মেয়াদ ফুরায়, হয়তো না, তবে মৃত্যু হয়। অবাধ্য মাংস-পিণ্ড আর শীর্ষ দণ্ডের লুকোচুরি শেষে শুকিয়ে যাওয়া কামরসের মতো’করে সলিল সমাধি ঘটে জীবনের, প্রেমের, যৌবনের জেনেছি, প্রেয়সীর মু

আরশি | অ-কবিতা

Image
  নতুন রাস্তার বদল—আমি মেলে ধরেছি আয়না, যেটুকু দেখছো, ওটা তোমারই প্রতিবিম্ব,পথের। দূরত্ব বাড়েনি, যতটুকু ছিলো, এতোদিন উপেক্ষা করে এসেছি কেবল; তারপর ধীরে ধীরে, চোখ খুলে–আয়না পেলে, মনে হলো, কতটা পথ, কতটা দূরে, যে পথের জন্য উপেক্ষা জমাই, আমাকেও উপেক্ষা করে গেলো সেই পথ, সেই মানুষ! অথচ বারবার দ্বিধা হয়, সংশয় আদৌ কি আমরা ছিলাম কাছে! আমাদের পথ মিলিয়েছে’ই, আমরা মিলিয়েছি সেই কবে।                --- – ‘আরশি’ – সামি আল সাকিব – ০৬/০৯/২০২১ – মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২১৬

চিঠি-অংশ | ‘অর্ধেক জীবনের অর্ধেক ভ্রম(ণ)’

Image
❝ কেমন আছো? উত্তরটা আমি জানি। তুমি কোনোদিন স্বীকার করোনি সত্য, তবু হৃদয়ে হৃদয়ে যে মেল আমাদের, তা নিশ্চয়ই অস্বীকার করবে না আর। সেই সংযুক্তি থেকেই আমি জানি, তুমি কেমন আছো।  তুমি সবসময় বলতে, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ এমন একটা বাক্য যা মুখে নয়, হৃদয়ের নীরবতা দিয়ে শুনতে হয়, শোনাতে হয়, অনুভব করতে হয়। এজন্যই বোধকরি কোনোদিনও তুমি মুখ ফুটে বলো নি। তবু আমি কীভাবে কীভাবে যেন টের পেয়ে গেছি, জেনে গেছি। যেহেতু আমাদের সংযোগ হৃদয়ের, তুমি নিশ্চয়ই জানো, আমি তোমাকে ঠিক কতটা, কতটা উন্মাদের মতো ভালোবাসি। এতোক্ষণে এটুকুও নিশ্চয়ই জেনে গেছো, আমি তোমাকে সুতীব্রভাবে যতখানি ভালোবাসি, তার চাইতেও অনেক অনেক বেশি ঘৃণা করতে শুরু করেছি। সবচেয়ে পছন্দের, সবচেয়ে প্রিয় মানুষটিকে যখন মানুষ ঘৃণা করতে শুরু করে, তা কতটা তীব্রতা নিয়ে আছড়ে পড়ে তা নিশ্চয়ই তোমার অজানা নয় লেখক সাহেব!  তুমি জানো! তুমি কতটা অসহায়, নির্জীব আর কাপুরুষ! তুমি কতটা দরিদ্র হৃদয়ের একজন অ-মানুষ, তোমার কোনো ধারণা আছে? নেই। থাকলে খুব সম্ভবত আজ তুমি নিঃসঙ্গতম, নিঃসাড় প্রাণী হয়ে রাতের আঁধারে হেঁটে ফিরতে না আর।  শুরু থেকেই আমরা দু’জনে বিপরীত দুই মেরুর মানুষ ছিলাম। ত

বুক রিভিউ : অন্যদিন —হুমায়ূন আহমেদ

Image
• পাঠ-অনুভূতি : আমাদের জীবনটা একটা ট্রেনযাত্রার মতোন। যাদের নিয়ে যাত্রা শুরু করি তাদের অনেকেই বিভিন্ন স্টেশনে নেমে যায়। এই যাত্রাপথের অল্প সময়েই অনেকের সাথে হৃদ্যতা গড়ে ওঠে। নতুন নতুন স্টেশন আসে, নতুন যাত্রী ওঠে, অনেকেই আবার কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পেয়ে নেমে যায়। এভাবে একসময় আমাদের কাঙ্ক্ষিত স্টেশন চলে আসে, আমরা নেমে পড়ি। অনেকেই সাথে নামে, অনেকেই থেকে যায়। জীবনটাও অনেকটা তেমনই, রেলগাড়িটার মতোন। চলতেই থাকে। ঢাকার বেশ পুরানো আর জরাজীর্ণ খুপরীর মতোন এক বোর্ডিং বাড়ি। নাম পান্থনিবাস। পান্থনিবাসের সন্ধিঃচ্ছেদ করলে হয়, পথিকের বাস করার জায়গা। নামের সাথে একদম মিলে যাওয়ার মতোন একটা জায়গা পান্থনিবাস। হরেক কিসিমের কিছু লোক নিয়ে কোনোরকম খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে এই বোর্ডিং। মালিক আর ম্যানেজার চেষ্টা করছেন বোর্ডিংটা বন্ধ করে নতুন কোনো হিল্লে করার।  এই বোর্ডিংয়েরই বয়সে তরুণ এক বোর্ডার সফিক। তার বাল্যবন্ধু রঞ্জু। অবসরপ্রাপ্ত, কিছুটা পাগলা কিসিমের বাবার হেয়ালিপনা আর সংসারের টানাপোড়নে প্রায় স্তব্ধ হয়ে যাওয়া পরিবারের ঘানির হাল ধরার পাশাপাশি নিজের পড়ালেখাটাও পুনরায় চালু করবার জন্যই রঞ্জুর আগমন। বাল্যকালের সফিকের স

মোহ কেটে যাবে | সামি আল সাকিব

Image
❑ তারপর একদিন হেঁটে-ফিরে — সব মোহ কেটে যাবে আপনার। আমার একঘেয়ে কবিতা, নেহাত’ই প্রলাপ আপনার কাছ থেকে মিইয়ে যাবে দিনকেদিন, দেহাবরণ, গুণ-দোষ, অযাচিত অভ্যেস— আপনার মগজ, গোপনাঙ্গ আর হৃদয় শিহরিত করবে না আর, উদ্বেলিত করবে না আর কালবোশেখির ঝড়ে.. তারপর একদিন হেঁটে-ফিরে — সব মোহ কেটে যাবে আপনার। দেখবেন—আমি খুব সাধারণ এক বাঙালি পুরুষ, একদম আনরোম্যান্টিক, বড্ড সেকেলে আর ভারীমুখো  চিরকুটে, কবিতায়, প্রলাপে আমার চাঁদ ছিঁড়ে আনা, হাওয়ায় ভেসে চলা কিংবা আকাশের খোলা চিঠি কেবলই আমার গালগল্প, ধাপ্পাবাজি! অথচ ওর চাইতেও শতেক বেশি অ-সাধারণ আপনার পেছন ছুটেছে, ছুটছে; আপনি কী এক মিথ্যের ঘোরে ছুটেছেন আমার দিকে, আমাদের দিকে.. তারপর একদিন হেঁটে-ফিরে — সব মোহ কেটে যাবে আপনার। ভাঙা হাট পরে হাটির মতোন ফিরে যাবেন আপনার পূর্ব-পুরুষের কাছে, মৃত্যুর প’রে— বিচারালয়ে পৌছানোর মতো ক’রে, তারপর একদিন হেঁটে-ফিরে — সব মোহ কেটে যাবে আপনার। যেহেতু আমি আপনার বিশেষ কেউ হতে পারিনি সুতরাং আমাদের কোনো ‘বিশেষণ’ থাকবে না আর, আমাদের যা ছিলো, কেবলই মোহ ছিলো প্রতীক্ষায় গুড়েবালি, ঘোলের মিল-মেশে.. আমাদের আয়ু ফুরিয়ে আসে, আমাদের আয়ু ছিলো মোহে, হৃ

অর্ধেক সত্যের অর্ধেক ভ্রম(ণ) | সামি আল সাকিব

Image
❑ মাঝেমধ্যে অকারণ দুঃখ হয়। আমরা তখন অকারণে বেড়িয়ে পড়ি। হাঁটতে হাঁটতে চড়ে বসি বাসে। তারপর ধীরেসুস্থে বাস এগোয়, যেন তার অন্তিমযাত্রা। নগরীর জট ক্রমে সরে যায়, বড় রাস্তা সরু হতে থাকে, আমাদের মনে হয় যেন ফিরে যাচ্ছি আপন-আলয়। অনেকক্ষণ বাদে অন্তিম গন্তব্য এলে নেমে পড়ি বাস থেকে, হেল্পার নামবার তাড়া দেয়। তারপর পকেট হাতড়াতে গিয়ে পড়ে থাকা সিগারেট, ম্যাচ আর লজেন্স বের করি, মুখে পুড়ে ঠোঁটে ছোঁয়াই অগ্নি-কাণ্ড, তাতে আগুন জ্বালিয়ে আমরা হাঁটতে শুরু করি। একসময় মজুদ ফুরিয়ে যায়, আগুন নিভে যায় অগ্নি-কাণ্ডে। ছুঁড়ে ফেলে জুতোয় পিষে ফেলি, আমরা হাঁটায় মনোযোগী হই। মনোযোগী হই রাজনীতি, গল্প-কবিতা, ধর্ম-বিজ্ঞান আর প্রেয়সীর সাথে অহেতুক আলাপে, তর্কে। তারপর একসময় পথ ফুরিয়ে গেলে একটা গ্রাম, আদর্শ এক পল্লিগ্রামে নিজেদের খুঁজে পাই। আমরা বিনা অনুমতিতে ঢুকে পড়ি গ্রামে। এদেশ আমাদের, এই গ্রাম আমাদের না হোক, এই দেশের গ্রাম বলেই এটা আমাদেরও গ্রাম। নিজ গ্রামে অনুমতি নেবো কেন? নিই না। এগোতে এগোতে গিয়ে দাড়াই সবচে’ প্রবীণ দোকানির দোকানে। নিঃসঙ্কোচে জানতে চাই, দাদু, ভাত খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা করা যায়? তিনি বলে দেন, আপনেরা এই অসময়

ভালোবাসা চাষ | অ-কবিতা | সামি আল সাকিব

Image
❑ আপনার যে নিষিদ্ধ পল্লীতে — এখনো ফুল ফোটে ফুলে ফুলে সুবাস ভরে ওঠে পদ্মকাঁটা ফোটেনি কোথাও; তা’র হৃদয়ঙ্গম করবো আমি যে মানচিত্র— এখনো কাঁটাতারহীনা আপনার জমিনে তার প্রেম ফোটে পানিতে হাসি-ঢেউ নির্মল আকাশে মুক্তির স্বাদ সেখানে জীবনের স্বাদ ছোঁয়াবো আমি যেখানে আপনার— নাতিশীতোষ্ণ গ্রীষ্ম নিয়মিত বয়ে চলা মেঘ থেমে থেমে চলে রূপকথা-পথ সেখানে বসন্ত ছোঁয়াবো আমি গভীর অরণ্যে ঢাকা— একান্ত যতটুকু আপনার ধীরে ধীরে গড়ে ওঠা তীর প্রতীক্ষা রেখে দেয়া যত সাধ আহ্লাদী জীবনের প্রেম-সমেত হরকাবানের মতো করে হঠাৎ - সবটুকু উজাড় ক’রে— ভালোবাসা চাষ করবো আমি।                 --- ~ ‘ভালোবাসা চাষ’ ~  সামি আল সাকিব ~  ৩০/০১/২০২১ ~  মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২১৬  

বুক রিভিউ : ‘বৃষ্টি ও মেঘমালা’—হুমায়ূন আহমেদ

Image
❑ • পাঠ -অনুভূতি : হাসান। একটা ছোট্ট কনস্ট্রাকশন ফার্মের কর্তা। তার ব্যক্তিগত সহকারী - লীনা। হাসান,লীনা, অফিস পিয়নসহ অফিসের মোট সদস্য সংখ্যা কমতে কমতে পাঁচজনে এসে ঠেকেছে। খুব খারাপ সময় যাচ্ছে অফিসের। গত তিনমাস যাবৎ বেতন হয়নি কারো। এমন চললে বন্ধ করে দিতে হবে ফার্মটি।  একটা প্রজেক্ট নিয়ে ঘুরে দাড়ানোর আশায় হন্যে হয়ে যখন দৌড়াদৌড়ি চলছে তখন'ই ঈশ্বরের দূত হয়ে আসেন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, বৃদ্ধ ইয়াকুব আলী। ব্যক্তিজীবনে তিনি নিঃসঙ্গ। তার একমাত্র মেয়ে স্বামী-কন্যা নিয়ে বিদেশে বসবাস করেন। তার ইচ্ছে নাতনি এলেনে'র আগামী জন্মদিনে সে দেশে এলে তাকে চমকে দেবার মতো একটা বিশেষকিছু উপহার হিসেবে দেবেন। বিশেষকিছুটা - মায়ানগর। মায়ানগর তৈরির দায়িত্ব পান হাসান সাহেব। ওদিকে লীনার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে ফিরোজে’র সাথে। লীনা ভালোবাসে হাসান সাহেবকে, তবে ঠিক কপোত-কপোতির ভালোবাসা নয়। শ্রদ্ধা আর মুগ্ধতার মিশ্রণের যে’ই অনুভূতি, অনেকটাই তেমন। হাসানের ছোট্ট ছেলে অন্তু। বাবা পাগল এই ছেলেটা অসুস্থ। ওদিকে হাসান ব্যস্ত মায়ানগর তৈরিতে ছেলেকে ভালোবাসলেও কাজে মশগুল হাসানের অবসর হয় না ছেলেকে, পরিবারকে সময় দেবার। ধীরে ধীরে হাসানের সা

‘ছাপোষা আবাল-কথন’ | সামি আল সাকিবে’র প্রলাপ

Image
❑ আমি মূলত ছাপোষা আবাল মূলত কিচ্ছুটি নেই আমার; ধ্বসে পড়া পাহাড়ের মতো যদি বলি, মুখ ফেরানো ঈশ্বর দায়গ্রস্ত বাবা-মা বিষ-বন্দী ফুসফুস চুরমার খা’ব বিষাদের দিন প্রেয়সীর এড়িয়ে যাওয়া লক্ষ্যহীন খোলস সেইসাথে মুঠোভরা হাহাকার, এসবই উপহাস হয়ে আছে আমার। আমি মূলত ছাপোষা আবাল, দম্ভের রূপকথা প’রে মূলত কিচ্ছুটি নেই আমার, কিছু মূল্যহীন আকাশ, অপর্যাপ্ত শব্দমালা আর পা’জুড়ে ব্যর্থ ধুলো পড়ে আছে একটা আকাশ আছে, ওদিকে আমার পরিচয় -বামন চাঁদ ছুঁইবার সাধ চির অধরাই থেকে গেছে যা আছে, তা আছে বলে’ই মূলত কিচ্ছুটি নেই আমার যেন আমি ছাপোষা আবাল। পৃথিবী আমাকে চায় না ঈশ্বর আমাকে চান না শয়তান অট্টহাস্য করে চলে বাবা-মার কাছে বড় ভারী স্বপ্নের কাছে ত্যাজ্য প্রেয়সী আর পথের প’রে আমাকে খোঁজার দায় নেই কারো, যেন ঝড়ের ভেসে চলা যাযাবর হাজারের ভীড়ে উটকো এক.. এমন ভীড় ক্রমশ গিলে খাচ্ছে রোজ গিলতে গিলতে গলা অবধি এসে গেছে, যেন গলায় বিঁধে যাওয়া কাঁটা, এর প’রে আর কিচ্ছুটি নেই আমার; আমি মূলত ছাপোষা আবাল আমার মূলত মুণ্ডুপাত চাই, মূলত মহাকাল চাই; এসবের কিছুই যেহেতু নেই সুতরাং আমি অবশ্যই ছাপোষা আবাল, আবালের মূলত ঘুমাতে হয়, আমি ঘুমাই মহাকালে?    

তাকাইতে পারি না | অ-কবিতা | সামি আল সাকিব

Image
❑ আপনি বলেন, তাকাও... আমি হঠাৎ, অপ্রস্তুত, সলজ্জে চোখে চেয়ে থাকি আপনার পানে চোখ,নাক, ঠোঁট, পেশীর চল আর ভ্রু যুগলের দিকে চাইতে গিয়ে নামিয়ে আনি চোখ, ও চোখে কথকতা,কত কথা, উচ্ছ্বল ছটফটানি আমি সইতে পারি না, ছাতির ভেতর দুড়ুম দুড়ুম করে নেমে আসে ঢেউ, ও ঢেউয়ে ভাসতে পারি না আপনি বলেন, তাকাও... আমি সংকোচ ভরা চোখ, অধিকার দাবি নিয়ে চেয়ে থাকি আপনার পানে ইন্দ্রের তৃষ্ণা নিয়ে-চেয়ে থাকি আপনার পানে হঠাৎ থেমে, আমায় ছুঁয়ে যখনই আপনি চোখে চোখ রাখেন ও চোখে এতো তেজ, মুখে অমিয় সুধা, সুতীব্র সাধ আর যে জোয়ারে মেতে ওঠে উর, আমি সইতে পারি না চোখ চোখ রাখবার সাহসটুকু পাই না আপনি বলেন, তাকাও... আমি কম্পিত ভীরু, হারাবার ভয়, ভগ্ন হৃদয়, খা'ব দেখা থামিয়ে- এগোতে পারি না। ফিরে আসি যেন কিছু নেই। ছাতির ভেতর দুড়ুম দুড়ুম করে নেমে আসে ঢেউ, আমি ভেসে যাই, ভাসতে পারি না আপনি বলেন, তাকাও.. আমি সব ভুলে যাই, তাকাই, আপনি বলেন আমি তাকাইতে পারি না..!                                             --- ~  'তাকাইতে পারি না' ~   সামি আল সাকিব ~  ২৭\১১\২০২০ ~  মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২১৬  

পশুত্বে পদার্পণ | কবিতা | সামি আল সাকিব

Image
❑ অনেক অনেক আগে ছেলে কিংবা মেয়ে হওয়ার আগে নারী কিংবা পুরুষ হওয়ার আগে আবাল কিংবা বৃদ্ধ হওয়ার আগে আমরা যখন শিশু ছিলাম আমরা তখন'ই মানুষ ছিলাম তারপর মানুষ হওয়ার জন্য যখন  আমরা শৈশব ছেড়ে কুঁজো হতে শুরু করলাম লম্বা আর মোটা হওয়ার জন্য লম্ফঝম্প শুরু করলাম প্রাণ-প্রকৃতি বশে আনলাম ঘরে জ্বালিয়ে খেতে শিখলাম জঙ্গল-মঙ্গল, মাংস আর হৃদয় দল ভারী করে ভোঁতা হতে শিখলাম নপুংসক পদবি লাগালাম, মানুষ আমাদের ষোলকলা ততদিনে পূর্ণ হয়েছে আমরা মূলত পশুত্বে পদার্পণ করেছি সফলভাবে।                                  --- ~ “ পশুত্বে পদার্পণ ” ~ সামি আল সাকিব ~ ০৬\০১\২০২১ ~ মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২১৬