Posts

Showing posts from February, 2021

মোহ কেটে যাবে | সামি আল সাকিব

Image
❑ তারপর একদিন হেঁটে-ফিরে — সব মোহ কেটে যাবে আপনার। আমার একঘেয়ে কবিতা, নেহাত’ই প্রলাপ আপনার কাছ থেকে মিইয়ে যাবে দিনকেদিন, দেহাবরণ, গুণ-দোষ, অযাচিত অভ্যেস— আপনার মগজ, গোপনাঙ্গ আর হৃদয় শিহরিত করবে না আর, উদ্বেলিত করবে না আর কালবোশেখির ঝড়ে.. তারপর একদিন হেঁটে-ফিরে — সব মোহ কেটে যাবে আপনার। দেখবেন—আমি খুব সাধারণ এক বাঙালি পুরুষ, একদম আনরোম্যান্টিক, বড্ড সেকেলে আর ভারীমুখো  চিরকুটে, কবিতায়, প্রলাপে আমার চাঁদ ছিঁড়ে আনা, হাওয়ায় ভেসে চলা কিংবা আকাশের খোলা চিঠি কেবলই আমার গালগল্প, ধাপ্পাবাজি! অথচ ওর চাইতেও শতেক বেশি অ-সাধারণ আপনার পেছন ছুটেছে, ছুটছে; আপনি কী এক মিথ্যের ঘোরে ছুটেছেন আমার দিকে, আমাদের দিকে.. তারপর একদিন হেঁটে-ফিরে — সব মোহ কেটে যাবে আপনার। ভাঙা হাট পরে হাটির মতোন ফিরে যাবেন আপনার পূর্ব-পুরুষের কাছে, মৃত্যুর প’রে— বিচারালয়ে পৌছানোর মতো ক’রে, তারপর একদিন হেঁটে-ফিরে — সব মোহ কেটে যাবে আপনার। যেহেতু আমি আপনার বিশেষ কেউ হতে পারিনি সুতরাং আমাদের কোনো ‘বিশেষণ’ থাকবে না আর, আমাদের যা ছিলো, কেবলই মোহ ছিলো প্রতীক্ষায় গুড়েবালি, ঘোলের মিল-মেশে.. আমাদের আয়ু ফুরিয়ে আসে, আমাদের আয়ু ছিলো মোহে, হৃ

অর্ধেক সত্যের অর্ধেক ভ্রম(ণ) | সামি আল সাকিব

Image
❑ মাঝেমধ্যে অকারণ দুঃখ হয়। আমরা তখন অকারণে বেড়িয়ে পড়ি। হাঁটতে হাঁটতে চড়ে বসি বাসে। তারপর ধীরেসুস্থে বাস এগোয়, যেন তার অন্তিমযাত্রা। নগরীর জট ক্রমে সরে যায়, বড় রাস্তা সরু হতে থাকে, আমাদের মনে হয় যেন ফিরে যাচ্ছি আপন-আলয়। অনেকক্ষণ বাদে অন্তিম গন্তব্য এলে নেমে পড়ি বাস থেকে, হেল্পার নামবার তাড়া দেয়। তারপর পকেট হাতড়াতে গিয়ে পড়ে থাকা সিগারেট, ম্যাচ আর লজেন্স বের করি, মুখে পুড়ে ঠোঁটে ছোঁয়াই অগ্নি-কাণ্ড, তাতে আগুন জ্বালিয়ে আমরা হাঁটতে শুরু করি। একসময় মজুদ ফুরিয়ে যায়, আগুন নিভে যায় অগ্নি-কাণ্ডে। ছুঁড়ে ফেলে জুতোয় পিষে ফেলি, আমরা হাঁটায় মনোযোগী হই। মনোযোগী হই রাজনীতি, গল্প-কবিতা, ধর্ম-বিজ্ঞান আর প্রেয়সীর সাথে অহেতুক আলাপে, তর্কে। তারপর একসময় পথ ফুরিয়ে গেলে একটা গ্রাম, আদর্শ এক পল্লিগ্রামে নিজেদের খুঁজে পাই। আমরা বিনা অনুমতিতে ঢুকে পড়ি গ্রামে। এদেশ আমাদের, এই গ্রাম আমাদের না হোক, এই দেশের গ্রাম বলেই এটা আমাদেরও গ্রাম। নিজ গ্রামে অনুমতি নেবো কেন? নিই না। এগোতে এগোতে গিয়ে দাড়াই সবচে’ প্রবীণ দোকানির দোকানে। নিঃসঙ্কোচে জানতে চাই, দাদু, ভাত খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা করা যায়? তিনি বলে দেন, আপনেরা এই অসময়

ভালোবাসা চাষ | অ-কবিতা | সামি আল সাকিব

Image
❑ আপনার যে নিষিদ্ধ পল্লীতে — এখনো ফুল ফোটে ফুলে ফুলে সুবাস ভরে ওঠে পদ্মকাঁটা ফোটেনি কোথাও; তা’র হৃদয়ঙ্গম করবো আমি যে মানচিত্র— এখনো কাঁটাতারহীনা আপনার জমিনে তার প্রেম ফোটে পানিতে হাসি-ঢেউ নির্মল আকাশে মুক্তির স্বাদ সেখানে জীবনের স্বাদ ছোঁয়াবো আমি যেখানে আপনার— নাতিশীতোষ্ণ গ্রীষ্ম নিয়মিত বয়ে চলা মেঘ থেমে থেমে চলে রূপকথা-পথ সেখানে বসন্ত ছোঁয়াবো আমি গভীর অরণ্যে ঢাকা— একান্ত যতটুকু আপনার ধীরে ধীরে গড়ে ওঠা তীর প্রতীক্ষা রেখে দেয়া যত সাধ আহ্লাদী জীবনের প্রেম-সমেত হরকাবানের মতো করে হঠাৎ - সবটুকু উজাড় ক’রে— ভালোবাসা চাষ করবো আমি।                 --- ~ ‘ভালোবাসা চাষ’ ~  সামি আল সাকিব ~  ৩০/০১/২০২১ ~  মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২১৬  

বুক রিভিউ : ‘বৃষ্টি ও মেঘমালা’—হুমায়ূন আহমেদ

Image
❑ • পাঠ -অনুভূতি : হাসান। একটা ছোট্ট কনস্ট্রাকশন ফার্মের কর্তা। তার ব্যক্তিগত সহকারী - লীনা। হাসান,লীনা, অফিস পিয়নসহ অফিসের মোট সদস্য সংখ্যা কমতে কমতে পাঁচজনে এসে ঠেকেছে। খুব খারাপ সময় যাচ্ছে অফিসের। গত তিনমাস যাবৎ বেতন হয়নি কারো। এমন চললে বন্ধ করে দিতে হবে ফার্মটি।  একটা প্রজেক্ট নিয়ে ঘুরে দাড়ানোর আশায় হন্যে হয়ে যখন দৌড়াদৌড়ি চলছে তখন'ই ঈশ্বরের দূত হয়ে আসেন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, বৃদ্ধ ইয়াকুব আলী। ব্যক্তিজীবনে তিনি নিঃসঙ্গ। তার একমাত্র মেয়ে স্বামী-কন্যা নিয়ে বিদেশে বসবাস করেন। তার ইচ্ছে নাতনি এলেনে'র আগামী জন্মদিনে সে দেশে এলে তাকে চমকে দেবার মতো একটা বিশেষকিছু উপহার হিসেবে দেবেন। বিশেষকিছুটা - মায়ানগর। মায়ানগর তৈরির দায়িত্ব পান হাসান সাহেব। ওদিকে লীনার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে ফিরোজে’র সাথে। লীনা ভালোবাসে হাসান সাহেবকে, তবে ঠিক কপোত-কপোতির ভালোবাসা নয়। শ্রদ্ধা আর মুগ্ধতার মিশ্রণের যে’ই অনুভূতি, অনেকটাই তেমন। হাসানের ছোট্ট ছেলে অন্তু। বাবা পাগল এই ছেলেটা অসুস্থ। ওদিকে হাসান ব্যস্ত মায়ানগর তৈরিতে ছেলেকে ভালোবাসলেও কাজে মশগুল হাসানের অবসর হয় না ছেলেকে, পরিবারকে সময় দেবার। ধীরে ধীরে হাসানের সা

‘ছাপোষা আবাল-কথন’ | সামি আল সাকিবে’র প্রলাপ

Image
❑ আমি মূলত ছাপোষা আবাল মূলত কিচ্ছুটি নেই আমার; ধ্বসে পড়া পাহাড়ের মতো যদি বলি, মুখ ফেরানো ঈশ্বর দায়গ্রস্ত বাবা-মা বিষ-বন্দী ফুসফুস চুরমার খা’ব বিষাদের দিন প্রেয়সীর এড়িয়ে যাওয়া লক্ষ্যহীন খোলস সেইসাথে মুঠোভরা হাহাকার, এসবই উপহাস হয়ে আছে আমার। আমি মূলত ছাপোষা আবাল, দম্ভের রূপকথা প’রে মূলত কিচ্ছুটি নেই আমার, কিছু মূল্যহীন আকাশ, অপর্যাপ্ত শব্দমালা আর পা’জুড়ে ব্যর্থ ধুলো পড়ে আছে একটা আকাশ আছে, ওদিকে আমার পরিচয় -বামন চাঁদ ছুঁইবার সাধ চির অধরাই থেকে গেছে যা আছে, তা আছে বলে’ই মূলত কিচ্ছুটি নেই আমার যেন আমি ছাপোষা আবাল। পৃথিবী আমাকে চায় না ঈশ্বর আমাকে চান না শয়তান অট্টহাস্য করে চলে বাবা-মার কাছে বড় ভারী স্বপ্নের কাছে ত্যাজ্য প্রেয়সী আর পথের প’রে আমাকে খোঁজার দায় নেই কারো, যেন ঝড়ের ভেসে চলা যাযাবর হাজারের ভীড়ে উটকো এক.. এমন ভীড় ক্রমশ গিলে খাচ্ছে রোজ গিলতে গিলতে গলা অবধি এসে গেছে, যেন গলায় বিঁধে যাওয়া কাঁটা, এর প’রে আর কিচ্ছুটি নেই আমার; আমি মূলত ছাপোষা আবাল আমার মূলত মুণ্ডুপাত চাই, মূলত মহাকাল চাই; এসবের কিছুই যেহেতু নেই সুতরাং আমি অবশ্যই ছাপোষা আবাল, আবালের মূলত ঘুমাতে হয়, আমি ঘুমাই মহাকালে?