Posts

Showing posts from June, 2022

প্রলাপা’য়োজন -০৪ | সামি আল সাকিব

Image
একদিন নীলা জিজ্ঞেস করলেন হঠাৎ, আমায় ভালোবাসেন? নিয়ত ছিলো, বলে দেবো– ভালোবাসি, আপনাকে ভালোবাসি, আমি আপনাকে ভালোবাসি। অথচ আমি বললাম, প্রশ্নই ওঠে না। নীলা, আবারো পুছলেন, সত্যি? কী জানি, সপ্তন্দ্রিয় নাকি মেয়েদের বেশ সজাগ, তাই হয়তো। আমি আর কিছু বলিনি, চুপটি করে হাসবার চেষ্টা করলাম। তিনি আর কিছু বললেন না। আর কোনোদিনও কিছু বলেননি। আমাদের দাঁড়াবার পথটুকু দাঁড়িয়ে থাকতেই দু’ভাগ হয়ে গেছে, হয়ে গেছে নতুন দু’টো রাস্তা। নীলা তার প্রিয়ের কাছে এগিয়েছেন ধীর ল’য়ে। আমার আর কেউ নেই, ছিলো না, আমি ওপথেই দাঁড়িয়ে ছিলাম, আছি। অথর্ব প্রহর দাঁড়িয়ে আমার দু’পা, সারা শরীরজুড়ে শেকড় বেড়ে উঠছে, ভেদ করে গভীরে চলে গেছে মাটির, আমি হয়ে উঠেছি বটবৃক্ষ, মায়ার, স্মৃতিকাতরতার। আবছায়া মনে হয়, বলি– নীলা, আপনার প্রতি আমার ভালোবাসা নয়, মায়া হয়, এই মায়ার বাঁধন আমার ভাঙ্গেনাই। আমি তো কোনোদিনও ভালোবাসা চাইনি, কেবল এই মায়াটুকুন চেয়েছি, আপনার মায়াটুকুন আমারে ছাড়ে না, আমি ছাড়তেও চাই না, আমি আজীবন এই মায়ার খোঁজে অবিরত। আর কোথায় যাবো আমি! আমার দু’পায় গজানো শেকড়, আপনার মায়া নিয়ে স্থির হয়ে আছে, মানুষ তো হেঁটে চলে যায়, গাছ কি পায়! আমি সেই গাছ

দেখা-অদেখা | অ-কবিতা | সামি আল সাকিব

Image
  আপনাকে আর দেখা হচ্ছে না আজকাল কথা হচ্ছে না ফোনকলে, নেহা’ই অন্তর্জালে আপনার আবাসস্থলে—নারী-নরের অন্তর্বাস উড়ে, সগর্বে সাক্ষর করে যৌবন-স্বাধীনতা’ সদ্য জীবনের মাড়িয়ে চলা পথে পথে, তেপান্তরে, ঘুপচির পাড় ধরে— প্রেমের সাক্ষর ব’য়ে ঠায়–শুকিয়ে যাওয়া কাম-রস থলে আর ছিটকে চারুশিল্প গড়া স্থানগুলো সাক্ষর দিয়ে যায়— উদ্যাম যৌবনের, জীবনের.. সাবধানে মাড়িয়ে চলি পথ, এড়িয়ে চলি ছাপ একমুখী সড়কের বিভাজক হতে সাধ—নেই কোনোদিন। পদে পদে পদাঙ্ক ভাসে, আপনার আবাসস্থলে—নারী-নরের অন্তর্বাস উড়ে, সগর্বে সাক্ষর করে যৌবন-স্বাধীনতা’ সদ্য জীবনের মহাকাল আটকে গেছে, গলায় আঁটকে যাওয়া কাঁটার মতো ক’রে যেন এখনও প্রেম, জীবন-যৌবন, জৈবিকতা আর অভিনয়শিল্প আটকে আছে, জুড়ে আছে আমাদের কাম-সঙ্গমে অথচ আপনার আবাসস্থলে—নারী-নরের অন্তর্বাস উড়ে, সগর্বে সাক্ষর করে যৌবন-স্বাধীনতা’ সদ্য জীবনের বয়ে চলাটাই নিয়ম, সময় ব’য়ে যায়, ছোট খাল নদী হয়ে যায় মৌনতা মান-চিত্র আঁকে, নতুন রাষ্ট্রে পতি আসে,রাষ্ট্রপতি, মালিকানা ফসকে যায় হাত, নতুন হাতের প’রে— সীমান্ত ঘেঁষে উড়তে থাকে অন্তর্বাস দুটো নারী-নর কেবল’ই দেখে যাওয়া-দায়... ভোঁতা ভাষা’ পিছিয়

প্রলাপা’য়োজন-০৩ | সামি আল সাকিব

Image
  মানুষ ম’রে গেলে, সদরের-ঘরটাতে বড়-বাঁধাই ছবি ঝুলতে শুরু করে তার ছবির গলায় চড়ানো ফুলের হার, সামনে ধূপদানি দিনে দিনে- ফুলগুলো শুকিয়ে যায়, থেকে যায় মড়মড়ে কিছু পাপড়ি, কঙ্কালসার হয়ে.. ধূপদানির কাঠিগুলো, পুড়ে গেছে কবে, পড়ে আছে ছাই, ওভাবেই যেভাবে মানুষটা ম’রে গেছে, তবু শ্রাদ্ধের নিয়মে ছবি টাঙানো সদরের ঘরটাতে, প্রমাণ দেখাতে, ম’রে গিয়েও তুমি বেঁচে আছো, তাই! আদতে মানুষ বাঁচে অন্তরে, স্মৃতিতে, স্মৃতি ম’রে গেলে, মানুষ ম’রে যায়, কেইবা তাতে ফুল চড়াতে যায়, ধূপদানি জ্বালায়! দেহাবসান তো কতভাবেই হয়! আত্মার সাথে আত্মার সংযোগ, বিচ্ছেদ কি তবে দেহাবসান নয়, আত্মার? স্মৃতি থেকে গেলে, মানুষ যত্নে তুলে রাখে, যত্নে ফুলমালা বদলায়, নিয়ম করে ধূপদানি দেয়, মৃত্যু মানেই তো বিচ্ছেদ নয়! বিচ্ছেদ তো ও’ই, ছবি আছে, মালা-কঙ্কালসার, ধূপদানি কত বছরের ছাই ধরে আছে, ছবি-জোড়া ধুলো, তবু লোকে বলে- এ’ই যে স্মৃতি, ধরে রাখা চাই। এরচে’ বড় প্রহসন-মিথ্যের, সামাজিকতার? আর কীসের জন্য, কেন করা, নিজের সাথেই দ্বিচারণ, স্মৃতিচারণ, অম্লান! আদৌ তাই?                                    --- ~ সামি আল সাকিব ~ ১৪/০৪/২০২২

প্রলাপা’য়োজন-০২ | সামি আল সাকিব

Image
  ভ্রম ভাঙ্গা ভালো, যদি’বা মন ভেঙ্গে যায়– তারচে’ ভেঙ্গে যাক ভ্রম, খানিক নাহয় দুঃখ হবে তারপর গা ঝাড়া দিয়ে, আবার এগোনো যাবে– যদি হয়ে থাকে, তবেই ভাঙ্গা যাবে–ভ্রম। অথচ মন ভেঙ্গে গেলে– মানুষ ব্যথা নয়, পাথর হয়ে যায় পাথুরে মূর্তি আর হৃদয়ে পাথর যার– তফাৎ নেই কোনো মানুষের বড় দায় বাঁচা, মানুষ বাঁচে হৃদয়ে-স্মৃতিতে, পাথরে কি স্মৃতি থাকে, ভালোবাসতে পায়, বাঁচতে পায়? মন ভেঙ্গে গেলে যে–মানুষের হৃদয়, পাথর হয়ে যায়! মন ভেঙ্গো না, ভাঙ্গিয়ো না আর, মানুষ ম’রে গেলে আর ফেরে নাকো, অথচ ভ্রম ভাঙ্গা যায়, দোল শেষে উঠে বসা যায়, ভাঙ্গা মন’ যায় না। তারচে’ ভ্রম ভাঙ্গা ভালো, যদি’বা মন ভেঙ্গে যায়– তারচে’ ভেঙ্গে যাক ভ্রম, মানুষ বেঁচে থাক। পাথরের পৃথিবীতে রাত নেমে আসে, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর চড়ে বসে, এখন তোমাকে ভয় করে, ঘেন্না করে তারচে’ বেশি!                      --- ~ ২০-০৪-২০২২ ~ সামি আল সাকিব

প্রলাপা’য়োজন-০১ | সামি আল সাকিব

Image
 কথারা ফুরায় যায়, নীলা। বলতে বলতে একটা সময় আসে, সময় ফুরায়া যায়। সময় ফুরায়া গেলে কথারা ফুরায় যায়। সময়ের সাথে সাথে, একটা সময় আসে, মানুষ নিজেও ফুরায়া যায়। মানুষ নিজে ম’রে যায়। অথর্বতায়, তার ভেতরে থাকা সত্ত্বা হাল ছেড়ে দেয়। না বলতে বলতে, কথা জমতে জমতে একসময় জড়তা আসে, তারপরে স্থায়ী বাঁধ, কথারা তখন ফুরায়া যায়। একা একা বলতে বলতে একটা সময় ক্লান্তি আসে, শ্রান্তি। দেরি করে হলেও একটা সময় বোধ হয়, সবটা অহেতুক। এতো শব্দ, বাক্য, আর কথামালার সবটা জলাঞ্জলি। আমি কিংবা তুমি বলি, অথচ কেউ কারোটা শুনতে পারি না, কথার প্রত্যুত্তর না হোক, অন্তত বোঝাতে পারি না আমি শুনছি, তুমি বলো। কিংবা তুমি শুনছো, আমি বলি। তখন জড়তা গ্রাস করে, ছেঁকে ধরে অবষাদ। সবটা ব্যর্থ লাগে। সন্তর্পণে কখনো কখনো ভিজে ওঠে চোখ। অথচ কথারা ফুরায়া যায় তখন। চাইলেও আর বলা যায় না। যথার্থ সঙ্গী না পেলে, হৃদয় কোঠরে জমে থাকা কথা, চাইলেই তো আর বলা যায় না। কথারা তখন জমতে শুরু করে। একটা সময় জমতে জমতে মোহর মেরে যায়। সময়, মানুষ কিংবা যথার্থতার অভাবে একটা সময় সবটা ম্লান হয়ে ওঠে। মানুষ হয়ে ওঠে শব্দবোমা, নিষ্ক্রিয়। ভ্রমে ভর করে যে জলাঞ্জলি যায় শব্দের, শব্দাঞ্জল