বিডিআর বিদ্রোহ : প্রশ্নরা আজো জেগে আছে | মুক্ত আলাপ




২৫শে ফেব্রুয়ারি। বাঙালি জাতির জীবনের এক মর্মান্তিক কালো অধ্যায়। ২০০৯ সালের এইদিনেই বিডিআর বিদ্রোহের নামে খুবই নিষ্ঠুর এবং ঘৃণ্যভাবে খুবই পরিকল্পনা করে বিডিআর সদর দপ্তরে(পিলখানা) একে একে হত্যা করা হয় ৫৭ জন চৌকশ,মেধাবী,দেশপ্রেমিক সেনা অফিসার সহ ৭৪ জনকে।
এরকম নিষ্ঠুর,নির্মম এবং ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের পালিয়ে যাবার নিঃশর্ত সুযোগ দেয়া হয় তৎকালীন আওয়ামী সরকারের পক্ষ থেকে।পরবর্তীতে দেশি-বিদেশি নানা চাপে পড়ে বাধ্য হয়ে বিচারকাজ শুরু করলেও দোষীদের ছাড় দিয়ে সাজা দেয়া হয় সাধারণ বিডিআর সদস্যদের। সরকার কোনোমতে তড়িঘড়ি করে বিচারকাজ শেষ করলেও সেটি ছিল প্রশ্নবিদ্ধ এবং বিতর্কিত একটি ফলাফল। এমন ষড়যন্ত্রের পেছনে যাদের হাত ছিল তারা আজ অবধি আড়ালেই থেকে গেল। বাংলাদেশ হারালো ৫৭জন প্রকৃত দেশপ্রেমিক কাণ্ডারিকে। একইসাথে আমাদের সামরিক বাহিনীকে এমন একটা ক্ষত দিয়ে গেল যা কোনোদিনই পূরণ হবার যোগ্য নয়। তারা ছিলেন বাংলাদেশের শত্রুদের জন্য ত্রাস। তাদেরকে এমন নির্মমভাবে হত্যার মাধ্যমে তারা বাংলাদেশের প্রতিবাদের ক্ষমতা চিরতরে ধ্বংস করে দিয়ে গেল। আর রেখে গেল অনেকগুলো প্রশ্ন-

ওই নির্মম হত্যাকাণ্ড কার মদদে হয়েছিল? কারা তাতে সহযোগিতা করেছিল? কারা সেই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল? কেন তাদের হত্যা করা হয়েছিল? বাংলাদেশের এমন ক্ষতিতে কাদের ফায়দা ছিল? আমাদের প্রতিবাদের স্বর বন্ধ করতে পেরে সবচেয়ে বেশি লাভবান কারা হতো? তৎকালীন সরকার কেন এতো বিতর্কিত ভূমিকা পালন করেছিল? কেন প্রকৃত দোষীদের ছাড় দিয়ে বাকিদের বিচারের নামে প্রহসনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হলো?

জানি,এগুলোর উত্তর আর কোনোদিনই পাওয়া যাবে না।১০ বছর হয়ে গেলো,কেউই উত্তর দেবার মতো সাহস করে উঠতে পারলো না,হয়তো আর কোনোদিন পারবেও না।যারাই উত্তর দেয়ার জন্য দাঁড়াবে না তাদের পরিণতিও হয়তো সেই হতভাগা সেনা কর্মকর্তাদের মতোই হবে। তবু আমরা কি কখনোই সেই আঁধার ঘুচাতে পারবো না? কেউ ই কি আর আমাদের আলোর পথ দেখাতে,প্রতিবাদী দেশপ্রেমিক হয়ে বাংলাদেশকে সেইসব কালো শকুনের হাত থেকে রক্ষা করতে আসবে না?!
প্রশ্নটা কি প্রশ্নই থেকে যাবে? আমরা কি কখনোই উত্তর খুঁজে পাবো না?
হে প্রভু আমাদের আলো দাও,সত্যের আলো।সে আলোতে মিথ্যাকে যেন জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দিতে পারি এমন আলো।


এমন আলো আমাদের দেবে তো প্রভু?


©Sami Al Shakib

Comments

Popular posts from this blog

বুক রিভিউ: যাপিত জীবন - সেলিনা হোসেন

বুক রিভিউ: মেমসাহেব - নিমাই ভট্টাচার্য

বুক রিভিউ : ‘বৃষ্টি ও মেঘমালা’—হুমায়ূন আহমেদ

প্রলাপা’য়োজন -০৪ | সামি আল সাকিব