Posts

নয়া-পাতা

পাখিদের গান | অ-কবিতা | সামি আল সাকিব

Image
পাপ যদি হ’য়ে থাকে তবে পুরোটাই পাপ, অর্ধেক, অর্ধেক করে ভাগ করে নেবো, যেমনটা ভাগ করে নেয় নর-নারী, তার জীবনের পথ তবু প্রিয়তমা, মিলিয়ে উঠি এসো মিলিয়ে নিই দুটো আত্মা, ঠোঁটের সাথে ঠোঁট কেউ কারোর বেশি নই, সমান নই, আদতে পরিপূরক তারপর ব’য়ে চলি, স্বর্গ নিরবধি, দুটো আবাবিল পাখি যত বাঁধা-ভাগ, জমিনে আজ, আকাশের ভাগ আছে নাকি! প্রিয়তমা, এসো পাখি হয়ে উঠি, মানবজন্মে উড়বার সাধ, হিসেবের খাতা চুকিয়ে আজ, মালিন্য-ভেদ-পাপ, ভাগ করে নিই আধাআধি, ঊর্ধ্বে গেলে প’রে, উতড়ে-ওড়ে ছুটি!                --- ~ ‘ পাখিদের গান’ ~  সামি আল সাকিব ~ ০৯/১০/২০২২ ~  মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২১৬    

প্রলাপা’য়োজন -০৪ | সামি আল সাকিব

Image
একদিন নীলা জিজ্ঞেস করলেন হঠাৎ, আমায় ভালোবাসেন? নিয়ত ছিলো, বলে দেবো– ভালোবাসি, আপনাকে ভালোবাসি, আমি আপনাকে ভালোবাসি। অথচ আমি বললাম, প্রশ্নই ওঠে না। নীলা, আবারো পুছলেন, সত্যি? কী জানি, সপ্তন্দ্রিয় নাকি মেয়েদের বেশ সজাগ, তাই হয়তো। আমি আর কিছু বলিনি, চুপটি করে হাসবার চেষ্টা করলাম। তিনি আর কিছু বললেন না। আর কোনোদিনও কিছু বলেননি। আমাদের দাঁড়াবার পথটুকু দাঁড়িয়ে থাকতেই দু’ভাগ হয়ে গেছে, হয়ে গেছে নতুন দু’টো রাস্তা। নীলা তার প্রিয়ের কাছে এগিয়েছেন ধীর ল’য়ে। আমার আর কেউ নেই, ছিলো না, আমি ওপথেই দাঁড়িয়ে ছিলাম, আছি। অথর্ব প্রহর দাঁড়িয়ে আমার দু’পা, সারা শরীরজুড়ে শেকড় বেড়ে উঠছে, ভেদ করে গভীরে চলে গেছে মাটির, আমি হয়ে উঠেছি বটবৃক্ষ, মায়ার, স্মৃতিকাতরতার। আবছায়া মনে হয়, বলি– নীলা, আপনার প্রতি আমার ভালোবাসা নয়, মায়া হয়, এই মায়ার বাঁধন আমার ভাঙ্গেনাই। আমি তো কোনোদিনও ভালোবাসা চাইনি, কেবল এই মায়াটুকুন চেয়েছি, আপনার মায়াটুকুন আমারে ছাড়ে না, আমি ছাড়তেও চাই না, আমি আজীবন এই মায়ার খোঁজে অবিরত। আর কোথায় যাবো আমি! আমার দু’পায় গজানো শেকড়, আপনার মায়া নিয়ে স্থির হয়ে আছে, মানুষ তো হেঁটে চলে যায়, গাছ কি পায়! আমি সেই গাছ

দেখা-অদেখা | অ-কবিতা | সামি আল সাকিব

Image
  আপনাকে আর দেখা হচ্ছে না আজকাল কথা হচ্ছে না ফোনকলে, নেহা’ই অন্তর্জালে আপনার আবাসস্থলে—নারী-নরের অন্তর্বাস উড়ে, সগর্বে সাক্ষর করে যৌবন-স্বাধীনতা’ সদ্য জীবনের মাড়িয়ে চলা পথে পথে, তেপান্তরে, ঘুপচির পাড় ধরে— প্রেমের সাক্ষর ব’য়ে ঠায়–শুকিয়ে যাওয়া কাম-রস থলে আর ছিটকে চারুশিল্প গড়া স্থানগুলো সাক্ষর দিয়ে যায়— উদ্যাম যৌবনের, জীবনের.. সাবধানে মাড়িয়ে চলি পথ, এড়িয়ে চলি ছাপ একমুখী সড়কের বিভাজক হতে সাধ—নেই কোনোদিন। পদে পদে পদাঙ্ক ভাসে, আপনার আবাসস্থলে—নারী-নরের অন্তর্বাস উড়ে, সগর্বে সাক্ষর করে যৌবন-স্বাধীনতা’ সদ্য জীবনের মহাকাল আটকে গেছে, গলায় আঁটকে যাওয়া কাঁটার মতো ক’রে যেন এখনও প্রেম, জীবন-যৌবন, জৈবিকতা আর অভিনয়শিল্প আটকে আছে, জুড়ে আছে আমাদের কাম-সঙ্গমে অথচ আপনার আবাসস্থলে—নারী-নরের অন্তর্বাস উড়ে, সগর্বে সাক্ষর করে যৌবন-স্বাধীনতা’ সদ্য জীবনের বয়ে চলাটাই নিয়ম, সময় ব’য়ে যায়, ছোট খাল নদী হয়ে যায় মৌনতা মান-চিত্র আঁকে, নতুন রাষ্ট্রে পতি আসে,রাষ্ট্রপতি, মালিকানা ফসকে যায় হাত, নতুন হাতের প’রে— সীমান্ত ঘেঁষে উড়তে থাকে অন্তর্বাস দুটো নারী-নর কেবল’ই দেখে যাওয়া-দায়... ভোঁতা ভাষা’ পিছিয়

প্রলাপা’য়োজন-০৩ | সামি আল সাকিব

Image
  মানুষ ম’রে গেলে, সদরের-ঘরটাতে বড়-বাঁধাই ছবি ঝুলতে শুরু করে তার ছবির গলায় চড়ানো ফুলের হার, সামনে ধূপদানি দিনে দিনে- ফুলগুলো শুকিয়ে যায়, থেকে যায় মড়মড়ে কিছু পাপড়ি, কঙ্কালসার হয়ে.. ধূপদানির কাঠিগুলো, পুড়ে গেছে কবে, পড়ে আছে ছাই, ওভাবেই যেভাবে মানুষটা ম’রে গেছে, তবু শ্রাদ্ধের নিয়মে ছবি টাঙানো সদরের ঘরটাতে, প্রমাণ দেখাতে, ম’রে গিয়েও তুমি বেঁচে আছো, তাই! আদতে মানুষ বাঁচে অন্তরে, স্মৃতিতে, স্মৃতি ম’রে গেলে, মানুষ ম’রে যায়, কেইবা তাতে ফুল চড়াতে যায়, ধূপদানি জ্বালায়! দেহাবসান তো কতভাবেই হয়! আত্মার সাথে আত্মার সংযোগ, বিচ্ছেদ কি তবে দেহাবসান নয়, আত্মার? স্মৃতি থেকে গেলে, মানুষ যত্নে তুলে রাখে, যত্নে ফুলমালা বদলায়, নিয়ম করে ধূপদানি দেয়, মৃত্যু মানেই তো বিচ্ছেদ নয়! বিচ্ছেদ তো ও’ই, ছবি আছে, মালা-কঙ্কালসার, ধূপদানি কত বছরের ছাই ধরে আছে, ছবি-জোড়া ধুলো, তবু লোকে বলে- এ’ই যে স্মৃতি, ধরে রাখা চাই। এরচে’ বড় প্রহসন-মিথ্যের, সামাজিকতার? আর কীসের জন্য, কেন করা, নিজের সাথেই দ্বিচারণ, স্মৃতিচারণ, অম্লান! আদৌ তাই?                                    --- ~ সামি আল সাকিব ~ ১৪/০৪/২০২২

প্রলাপা’য়োজন-০২ | সামি আল সাকিব

Image
  ভ্রম ভাঙ্গা ভালো, যদি’বা মন ভেঙ্গে যায়– তারচে’ ভেঙ্গে যাক ভ্রম, খানিক নাহয় দুঃখ হবে তারপর গা ঝাড়া দিয়ে, আবার এগোনো যাবে– যদি হয়ে থাকে, তবেই ভাঙ্গা যাবে–ভ্রম। অথচ মন ভেঙ্গে গেলে– মানুষ ব্যথা নয়, পাথর হয়ে যায় পাথুরে মূর্তি আর হৃদয়ে পাথর যার– তফাৎ নেই কোনো মানুষের বড় দায় বাঁচা, মানুষ বাঁচে হৃদয়ে-স্মৃতিতে, পাথরে কি স্মৃতি থাকে, ভালোবাসতে পায়, বাঁচতে পায়? মন ভেঙ্গে গেলে যে–মানুষের হৃদয়, পাথর হয়ে যায়! মন ভেঙ্গো না, ভাঙ্গিয়ো না আর, মানুষ ম’রে গেলে আর ফেরে নাকো, অথচ ভ্রম ভাঙ্গা যায়, দোল শেষে উঠে বসা যায়, ভাঙ্গা মন’ যায় না। তারচে’ ভ্রম ভাঙ্গা ভালো, যদি’বা মন ভেঙ্গে যায়– তারচে’ ভেঙ্গে যাক ভ্রম, মানুষ বেঁচে থাক। পাথরের পৃথিবীতে রাত নেমে আসে, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর চড়ে বসে, এখন তোমাকে ভয় করে, ঘেন্না করে তারচে’ বেশি!                      --- ~ ২০-০৪-২০২২ ~ সামি আল সাকিব

প্রলাপা’য়োজন-০১ | সামি আল সাকিব

Image
 কথারা ফুরায় যায়, নীলা। বলতে বলতে একটা সময় আসে, সময় ফুরায়া যায়। সময় ফুরায়া গেলে কথারা ফুরায় যায়। সময়ের সাথে সাথে, একটা সময় আসে, মানুষ নিজেও ফুরায়া যায়। মানুষ নিজে ম’রে যায়। অথর্বতায়, তার ভেতরে থাকা সত্ত্বা হাল ছেড়ে দেয়। না বলতে বলতে, কথা জমতে জমতে একসময় জড়তা আসে, তারপরে স্থায়ী বাঁধ, কথারা তখন ফুরায়া যায়। একা একা বলতে বলতে একটা সময় ক্লান্তি আসে, শ্রান্তি। দেরি করে হলেও একটা সময় বোধ হয়, সবটা অহেতুক। এতো শব্দ, বাক্য, আর কথামালার সবটা জলাঞ্জলি। আমি কিংবা তুমি বলি, অথচ কেউ কারোটা শুনতে পারি না, কথার প্রত্যুত্তর না হোক, অন্তত বোঝাতে পারি না আমি শুনছি, তুমি বলো। কিংবা তুমি শুনছো, আমি বলি। তখন জড়তা গ্রাস করে, ছেঁকে ধরে অবষাদ। সবটা ব্যর্থ লাগে। সন্তর্পণে কখনো কখনো ভিজে ওঠে চোখ। অথচ কথারা ফুরায়া যায় তখন। চাইলেও আর বলা যায় না। যথার্থ সঙ্গী না পেলে, হৃদয় কোঠরে জমে থাকা কথা, চাইলেই তো আর বলা যায় না। কথারা তখন জমতে শুরু করে। একটা সময় জমতে জমতে মোহর মেরে যায়। সময়, মানুষ কিংবা যথার্থতার অভাবে একটা সময় সবটা ম্লান হয়ে ওঠে। মানুষ হয়ে ওঠে শব্দবোমা, নিষ্ক্রিয়। ভ্রমে ভর করে যে জলাঞ্জলি যায় শব্দের, শব্দাঞ্জল

You Glow! | Delirium by Sami Al Shakib

Image
  you glow in the winter you glow in the summer you glow in the spring whenever I get to see, you glow you glow like the flowers in heaven I get to see you and it feels heaven I fall for you and it’s heaven and I love you; I too, glow, the feelings in, that’s heaven perhaps you’re the heaven, to me, in the earth I’m cursed, though, I don’t even get to see you; It’s heaven, it’s you, who glows, makes blooming, me and I wanna die, in heaven, buried on you, the regret of not being with you will die, then; you’re on my soul-heart or I in you, what differ’s! my eyes, then, that will turn in and grow flowers you’ve walked away, just within the fragrances and keep looking at you, with the bloomed face upto the sun, to you, and that’s the heaven; as I’ve loved you, with all my heart, warmth in the Oymyakon whenever I get to see, you glow, and that’s heaven to me, the dead, of soul and in love for you you’re heavenly, loving you is heaven, you glow, that makes me bloom and

বিষাদের গুঞ্জন | সামি আল সাকিব

Image
  কী এক অনিশ্চিতের দিকে ধাবমান আমরা! যেমন করে সূর্যের আলো ধরণীর প্রতিটি কোণা আর খাঁজে ছড়িয়ে পড়ে— কেমন এক ব্ল্যাকহোল–আঁধার ক্রমশ অন্ধকারাবৃত করে দিচ্ছে আমাদের প্রত্যেকটা স্থান, কেমন অনিশ্চয়তা আর নিরাপত্তা-অভাব, দোদুল্যতা গ্রাস করে নিচ্ছে আমাদের। মহাশূন্যে ভাসমান উল্কাপিণ্ডের মতো ক’রে ক্রমশই আমরা ধাবমান সে’ই আঁধারের কাছে, আমাদের কাছে ক্রমে সরে আসে আঁধার, আমাদের ক্রমে আবৃত করে, আমাদের কি অনুপস্থিতি আলো’র! আমরা হয়ে উঠি আঁধার–গোলক, আমাদের আয়ু, আগামী কাল, কতটা বিষাদ জমে আছে, কতটা আশাহীন! একঘেয়ে আয়ু নিয়ে আমাদের ছুটে চলা, কতটা বাধ্য হয়ে আমরা ক্রমশ ধাবমান, আঁধার–গোলকের পথে, ধীরে ধীরে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জর্জরিত আঁধার, জড়ায় আরো; তারপর, আমরা হয়ে উঠি সম্পূর্ণ আঁধারে পূর্ণ, সম্পূর্ণ নিমজ্জিত, আমরা এগোতে এগোতে আঁধারের গোলক ছুঁই, গোলকের প’রে কিছু নেই, হয়তো আছে, কি এক অসহ্যতা, দোদুল্যতা, নিরাপত্তা–অভাব, কি নিঃষ্প্রাণ, কতটা একঘেয়ে যন্ত্রণার, আঁধারটা নিশ্চয়ই মৃত্যু, আমরা ক্রমশ ধাবমান, আমাদের জড়িয়ে ধরে, আমরা জড়াই, বাধ্য হয়ে, কতটা অনিশ্চয়তার দিকে ধাবমান আমরা, কতটা নিঃসাড়, কতটা হতবাক হয়ে..             

সমাধিসৌধ | অ-কবিতা | সামি আল সাকিব

Image
  জেনেছি, মৃত্যু হতে এক আয়ু দূরবর্তী আমরা একটা প্রত্যাখান কিংবা ইতি, প্রেয়সীর ফিরিয়ে নেয়া মুখ কিংবা কোনোদিনই বৈপরীত্যে না হাঁটা সময় একটা চুমু, আত্মার সাথে অন্তরাত্মার সঙ্গম, আর রন্ধ্রে রন্ধ্রে সুতীব্র বিষাদ, দেহ-ত্যাগী যন্ত্রণায় আমাদের এক আয়ু ফুরিয়ে যায়, আমার জেনেছি, মৃত্যুর আগে বন্ধক ছাটা হয় চুলের এক-সহস্রাংশ মতো আঁধার গ্রাস করে, মৃত্যুকে, যে বাঁচে, বেঁচে যায় ছায়াতলে, ঠোঁট ছোঁয়ানো জলে জেনেছি মৃত্যু হতে আমার-প্রেয়সীর একটি চুমুর দূরত্ব, ততোটাই জীবন থেকে জেনেছি, মৃত্যু নিয়েই আমাদের বাস, আমাদের হৃদয়ে প্রেয়সীর কাছ থেকে ক্রমশ আবছা হতে হতে ম’রে যাই, জীবন্ত সমাধি ঘটে মানুষ বেঁচে থাকে, তাকে কবরে রাখা হয় জেনেছি, দেহের মৃত্যু নেই, মেয়াদ আছে মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে সমাহিত করা হয়, হয়তো না জেনেছি মৃত্যুর জন্য মরবার প্রয়োজন নেই, সমাধির জন্য মাটি কেউ ম’রে গেলে, হৃদয়ে, অদৃশ্য কবর খোঁড়া হয়, জীবন্ত সমাধি হয় মানুষের তখন মেয়াদ ফুরায়, হয়তো না, তবে মৃত্যু হয়। অবাধ্য মাংস-পিণ্ড আর শীর্ষ দণ্ডের লুকোচুরি শেষে শুকিয়ে যাওয়া কামরসের মতো’করে সলিল সমাধি ঘটে জীবনের, প্রেমের, যৌবনের জেনেছি, প্রেয়সীর মু

আরশি | অ-কবিতা

Image
  নতুন রাস্তার বদল—আমি মেলে ধরেছি আয়না, যেটুকু দেখছো, ওটা তোমারই প্রতিবিম্ব,পথের। দূরত্ব বাড়েনি, যতটুকু ছিলো, এতোদিন উপেক্ষা করে এসেছি কেবল; তারপর ধীরে ধীরে, চোখ খুলে–আয়না পেলে, মনে হলো, কতটা পথ, কতটা দূরে, যে পথের জন্য উপেক্ষা জমাই, আমাকেও উপেক্ষা করে গেলো সেই পথ, সেই মানুষ! অথচ বারবার দ্বিধা হয়, সংশয় আদৌ কি আমরা ছিলাম কাছে! আমাদের পথ মিলিয়েছে’ই, আমরা মিলিয়েছি সেই কবে।                --- – ‘আরশি’ – সামি আল সাকিব – ০৬/০৯/২০২১ – মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২১৬

চিঠি-অংশ | ‘অর্ধেক জীবনের অর্ধেক ভ্রম(ণ)’

Image
❝ কেমন আছো? উত্তরটা আমি জানি। তুমি কোনোদিন স্বীকার করোনি সত্য, তবু হৃদয়ে হৃদয়ে যে মেল আমাদের, তা নিশ্চয়ই অস্বীকার করবে না আর। সেই সংযুক্তি থেকেই আমি জানি, তুমি কেমন আছো।  তুমি সবসময় বলতে, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ এমন একটা বাক্য যা মুখে নয়, হৃদয়ের নীরবতা দিয়ে শুনতে হয়, শোনাতে হয়, অনুভব করতে হয়। এজন্যই বোধকরি কোনোদিনও তুমি মুখ ফুটে বলো নি। তবু আমি কীভাবে কীভাবে যেন টের পেয়ে গেছি, জেনে গেছি। যেহেতু আমাদের সংযোগ হৃদয়ের, তুমি নিশ্চয়ই জানো, আমি তোমাকে ঠিক কতটা, কতটা উন্মাদের মতো ভালোবাসি। এতোক্ষণে এটুকুও নিশ্চয়ই জেনে গেছো, আমি তোমাকে সুতীব্রভাবে যতখানি ভালোবাসি, তার চাইতেও অনেক অনেক বেশি ঘৃণা করতে শুরু করেছি। সবচেয়ে পছন্দের, সবচেয়ে প্রিয় মানুষটিকে যখন মানুষ ঘৃণা করতে শুরু করে, তা কতটা তীব্রতা নিয়ে আছড়ে পড়ে তা নিশ্চয়ই তোমার অজানা নয় লেখক সাহেব!  তুমি জানো! তুমি কতটা অসহায়, নির্জীব আর কাপুরুষ! তুমি কতটা দরিদ্র হৃদয়ের একজন অ-মানুষ, তোমার কোনো ধারণা আছে? নেই। থাকলে খুব সম্ভবত আজ তুমি নিঃসঙ্গতম, নিঃসাড় প্রাণী হয়ে রাতের আঁধারে হেঁটে ফিরতে না আর।  শুরু থেকেই আমরা দু’জনে বিপরীত দুই মেরুর মানুষ ছিলাম। ত

বুক রিভিউ : অন্যদিন —হুমায়ূন আহমেদ

Image
• পাঠ-অনুভূতি : আমাদের জীবনটা একটা ট্রেনযাত্রার মতোন। যাদের নিয়ে যাত্রা শুরু করি তাদের অনেকেই বিভিন্ন স্টেশনে নেমে যায়। এই যাত্রাপথের অল্প সময়েই অনেকের সাথে হৃদ্যতা গড়ে ওঠে। নতুন নতুন স্টেশন আসে, নতুন যাত্রী ওঠে, অনেকেই আবার কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পেয়ে নেমে যায়। এভাবে একসময় আমাদের কাঙ্ক্ষিত স্টেশন চলে আসে, আমরা নেমে পড়ি। অনেকেই সাথে নামে, অনেকেই থেকে যায়। জীবনটাও অনেকটা তেমনই, রেলগাড়িটার মতোন। চলতেই থাকে। ঢাকার বেশ পুরানো আর জরাজীর্ণ খুপরীর মতোন এক বোর্ডিং বাড়ি। নাম পান্থনিবাস। পান্থনিবাসের সন্ধিঃচ্ছেদ করলে হয়, পথিকের বাস করার জায়গা। নামের সাথে একদম মিলে যাওয়ার মতোন একটা জায়গা পান্থনিবাস। হরেক কিসিমের কিছু লোক নিয়ে কোনোরকম খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে এই বোর্ডিং। মালিক আর ম্যানেজার চেষ্টা করছেন বোর্ডিংটা বন্ধ করে নতুন কোনো হিল্লে করার।  এই বোর্ডিংয়েরই বয়সে তরুণ এক বোর্ডার সফিক। তার বাল্যবন্ধু রঞ্জু। অবসরপ্রাপ্ত, কিছুটা পাগলা কিসিমের বাবার হেয়ালিপনা আর সংসারের টানাপোড়নে প্রায় স্তব্ধ হয়ে যাওয়া পরিবারের ঘানির হাল ধরার পাশাপাশি নিজের পড়ালেখাটাও পুনরায় চালু করবার জন্যই রঞ্জুর আগমন। বাল্যকালের সফিকের স

মোহ কেটে যাবে | সামি আল সাকিব

Image
❑ তারপর একদিন হেঁটে-ফিরে — সব মোহ কেটে যাবে আপনার। আমার একঘেয়ে কবিতা, নেহাত’ই প্রলাপ আপনার কাছ থেকে মিইয়ে যাবে দিনকেদিন, দেহাবরণ, গুণ-দোষ, অযাচিত অভ্যেস— আপনার মগজ, গোপনাঙ্গ আর হৃদয় শিহরিত করবে না আর, উদ্বেলিত করবে না আর কালবোশেখির ঝড়ে.. তারপর একদিন হেঁটে-ফিরে — সব মোহ কেটে যাবে আপনার। দেখবেন—আমি খুব সাধারণ এক বাঙালি পুরুষ, একদম আনরোম্যান্টিক, বড্ড সেকেলে আর ভারীমুখো  চিরকুটে, কবিতায়, প্রলাপে আমার চাঁদ ছিঁড়ে আনা, হাওয়ায় ভেসে চলা কিংবা আকাশের খোলা চিঠি কেবলই আমার গালগল্প, ধাপ্পাবাজি! অথচ ওর চাইতেও শতেক বেশি অ-সাধারণ আপনার পেছন ছুটেছে, ছুটছে; আপনি কী এক মিথ্যের ঘোরে ছুটেছেন আমার দিকে, আমাদের দিকে.. তারপর একদিন হেঁটে-ফিরে — সব মোহ কেটে যাবে আপনার। ভাঙা হাট পরে হাটির মতোন ফিরে যাবেন আপনার পূর্ব-পুরুষের কাছে, মৃত্যুর প’রে— বিচারালয়ে পৌছানোর মতো ক’রে, তারপর একদিন হেঁটে-ফিরে — সব মোহ কেটে যাবে আপনার। যেহেতু আমি আপনার বিশেষ কেউ হতে পারিনি সুতরাং আমাদের কোনো ‘বিশেষণ’ থাকবে না আর, আমাদের যা ছিলো, কেবলই মোহ ছিলো প্রতীক্ষায় গুড়েবালি, ঘোলের মিল-মেশে.. আমাদের আয়ু ফুরিয়ে আসে, আমাদের আয়ু ছিলো মোহে, হৃ

অর্ধেক সত্যের অর্ধেক ভ্রম(ণ) | সামি আল সাকিব

Image
❑ মাঝেমধ্যে অকারণ দুঃখ হয়। আমরা তখন অকারণে বেড়িয়ে পড়ি। হাঁটতে হাঁটতে চড়ে বসি বাসে। তারপর ধীরেসুস্থে বাস এগোয়, যেন তার অন্তিমযাত্রা। নগরীর জট ক্রমে সরে যায়, বড় রাস্তা সরু হতে থাকে, আমাদের মনে হয় যেন ফিরে যাচ্ছি আপন-আলয়। অনেকক্ষণ বাদে অন্তিম গন্তব্য এলে নেমে পড়ি বাস থেকে, হেল্পার নামবার তাড়া দেয়। তারপর পকেট হাতড়াতে গিয়ে পড়ে থাকা সিগারেট, ম্যাচ আর লজেন্স বের করি, মুখে পুড়ে ঠোঁটে ছোঁয়াই অগ্নি-কাণ্ড, তাতে আগুন জ্বালিয়ে আমরা হাঁটতে শুরু করি। একসময় মজুদ ফুরিয়ে যায়, আগুন নিভে যায় অগ্নি-কাণ্ডে। ছুঁড়ে ফেলে জুতোয় পিষে ফেলি, আমরা হাঁটায় মনোযোগী হই। মনোযোগী হই রাজনীতি, গল্প-কবিতা, ধর্ম-বিজ্ঞান আর প্রেয়সীর সাথে অহেতুক আলাপে, তর্কে। তারপর একসময় পথ ফুরিয়ে গেলে একটা গ্রাম, আদর্শ এক পল্লিগ্রামে নিজেদের খুঁজে পাই। আমরা বিনা অনুমতিতে ঢুকে পড়ি গ্রামে। এদেশ আমাদের, এই গ্রাম আমাদের না হোক, এই দেশের গ্রাম বলেই এটা আমাদেরও গ্রাম। নিজ গ্রামে অনুমতি নেবো কেন? নিই না। এগোতে এগোতে গিয়ে দাড়াই সবচে’ প্রবীণ দোকানির দোকানে। নিঃসঙ্কোচে জানতে চাই, দাদু, ভাত খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা করা যায়? তিনি বলে দেন, আপনেরা এই অসময়

ভালোবাসা চাষ | অ-কবিতা | সামি আল সাকিব

Image
❑ আপনার যে নিষিদ্ধ পল্লীতে — এখনো ফুল ফোটে ফুলে ফুলে সুবাস ভরে ওঠে পদ্মকাঁটা ফোটেনি কোথাও; তা’র হৃদয়ঙ্গম করবো আমি যে মানচিত্র— এখনো কাঁটাতারহীনা আপনার জমিনে তার প্রেম ফোটে পানিতে হাসি-ঢেউ নির্মল আকাশে মুক্তির স্বাদ সেখানে জীবনের স্বাদ ছোঁয়াবো আমি যেখানে আপনার— নাতিশীতোষ্ণ গ্রীষ্ম নিয়মিত বয়ে চলা মেঘ থেমে থেমে চলে রূপকথা-পথ সেখানে বসন্ত ছোঁয়াবো আমি গভীর অরণ্যে ঢাকা— একান্ত যতটুকু আপনার ধীরে ধীরে গড়ে ওঠা তীর প্রতীক্ষা রেখে দেয়া যত সাধ আহ্লাদী জীবনের প্রেম-সমেত হরকাবানের মতো করে হঠাৎ - সবটুকু উজাড় ক’রে— ভালোবাসা চাষ করবো আমি।                 --- ~ ‘ভালোবাসা চাষ’ ~  সামি আল সাকিব ~  ৩০/০১/২০২১ ~  মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২১৬  

বুক রিভিউ : ‘বৃষ্টি ও মেঘমালা’—হুমায়ূন আহমেদ

Image
❑ • পাঠ -অনুভূতি : হাসান। একটা ছোট্ট কনস্ট্রাকশন ফার্মের কর্তা। তার ব্যক্তিগত সহকারী - লীনা। হাসান,লীনা, অফিস পিয়নসহ অফিসের মোট সদস্য সংখ্যা কমতে কমতে পাঁচজনে এসে ঠেকেছে। খুব খারাপ সময় যাচ্ছে অফিসের। গত তিনমাস যাবৎ বেতন হয়নি কারো। এমন চললে বন্ধ করে দিতে হবে ফার্মটি।  একটা প্রজেক্ট নিয়ে ঘুরে দাড়ানোর আশায় হন্যে হয়ে যখন দৌড়াদৌড়ি চলছে তখন'ই ঈশ্বরের দূত হয়ে আসেন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, বৃদ্ধ ইয়াকুব আলী। ব্যক্তিজীবনে তিনি নিঃসঙ্গ। তার একমাত্র মেয়ে স্বামী-কন্যা নিয়ে বিদেশে বসবাস করেন। তার ইচ্ছে নাতনি এলেনে'র আগামী জন্মদিনে সে দেশে এলে তাকে চমকে দেবার মতো একটা বিশেষকিছু উপহার হিসেবে দেবেন। বিশেষকিছুটা - মায়ানগর। মায়ানগর তৈরির দায়িত্ব পান হাসান সাহেব। ওদিকে লীনার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে ফিরোজে’র সাথে। লীনা ভালোবাসে হাসান সাহেবকে, তবে ঠিক কপোত-কপোতির ভালোবাসা নয়। শ্রদ্ধা আর মুগ্ধতার মিশ্রণের যে’ই অনুভূতি, অনেকটাই তেমন। হাসানের ছোট্ট ছেলে অন্তু। বাবা পাগল এই ছেলেটা অসুস্থ। ওদিকে হাসান ব্যস্ত মায়ানগর তৈরিতে ছেলেকে ভালোবাসলেও কাজে মশগুল হাসানের অবসর হয় না ছেলেকে, পরিবারকে সময় দেবার। ধীরে ধীরে হাসানের সা

‘ছাপোষা আবাল-কথন’ | সামি আল সাকিবে’র প্রলাপ

Image
❑ আমি মূলত ছাপোষা আবাল মূলত কিচ্ছুটি নেই আমার; ধ্বসে পড়া পাহাড়ের মতো যদি বলি, মুখ ফেরানো ঈশ্বর দায়গ্রস্ত বাবা-মা বিষ-বন্দী ফুসফুস চুরমার খা’ব বিষাদের দিন প্রেয়সীর এড়িয়ে যাওয়া লক্ষ্যহীন খোলস সেইসাথে মুঠোভরা হাহাকার, এসবই উপহাস হয়ে আছে আমার। আমি মূলত ছাপোষা আবাল, দম্ভের রূপকথা প’রে মূলত কিচ্ছুটি নেই আমার, কিছু মূল্যহীন আকাশ, অপর্যাপ্ত শব্দমালা আর পা’জুড়ে ব্যর্থ ধুলো পড়ে আছে একটা আকাশ আছে, ওদিকে আমার পরিচয় -বামন চাঁদ ছুঁইবার সাধ চির অধরাই থেকে গেছে যা আছে, তা আছে বলে’ই মূলত কিচ্ছুটি নেই আমার যেন আমি ছাপোষা আবাল। পৃথিবী আমাকে চায় না ঈশ্বর আমাকে চান না শয়তান অট্টহাস্য করে চলে বাবা-মার কাছে বড় ভারী স্বপ্নের কাছে ত্যাজ্য প্রেয়সী আর পথের প’রে আমাকে খোঁজার দায় নেই কারো, যেন ঝড়ের ভেসে চলা যাযাবর হাজারের ভীড়ে উটকো এক.. এমন ভীড় ক্রমশ গিলে খাচ্ছে রোজ গিলতে গিলতে গলা অবধি এসে গেছে, যেন গলায় বিঁধে যাওয়া কাঁটা, এর প’রে আর কিচ্ছুটি নেই আমার; আমি মূলত ছাপোষা আবাল আমার মূলত মুণ্ডুপাত চাই, মূলত মহাকাল চাই; এসবের কিছুই যেহেতু নেই সুতরাং আমি অবশ্যই ছাপোষা আবাল, আবালের মূলত ঘুমাতে হয়, আমি ঘুমাই মহাকালে?    

তাকাইতে পারি না | অ-কবিতা | সামি আল সাকিব

Image
❑ আপনি বলেন, তাকাও... আমি হঠাৎ, অপ্রস্তুত, সলজ্জে চোখে চেয়ে থাকি আপনার পানে চোখ,নাক, ঠোঁট, পেশীর চল আর ভ্রু যুগলের দিকে চাইতে গিয়ে নামিয়ে আনি চোখ, ও চোখে কথকতা,কত কথা, উচ্ছ্বল ছটফটানি আমি সইতে পারি না, ছাতির ভেতর দুড়ুম দুড়ুম করে নেমে আসে ঢেউ, ও ঢেউয়ে ভাসতে পারি না আপনি বলেন, তাকাও... আমি সংকোচ ভরা চোখ, অধিকার দাবি নিয়ে চেয়ে থাকি আপনার পানে ইন্দ্রের তৃষ্ণা নিয়ে-চেয়ে থাকি আপনার পানে হঠাৎ থেমে, আমায় ছুঁয়ে যখনই আপনি চোখে চোখ রাখেন ও চোখে এতো তেজ, মুখে অমিয় সুধা, সুতীব্র সাধ আর যে জোয়ারে মেতে ওঠে উর, আমি সইতে পারি না চোখ চোখ রাখবার সাহসটুকু পাই না আপনি বলেন, তাকাও... আমি কম্পিত ভীরু, হারাবার ভয়, ভগ্ন হৃদয়, খা'ব দেখা থামিয়ে- এগোতে পারি না। ফিরে আসি যেন কিছু নেই। ছাতির ভেতর দুড়ুম দুড়ুম করে নেমে আসে ঢেউ, আমি ভেসে যাই, ভাসতে পারি না আপনি বলেন, তাকাও.. আমি সব ভুলে যাই, তাকাই, আপনি বলেন আমি তাকাইতে পারি না..!                                             --- ~  'তাকাইতে পারি না' ~   সামি আল সাকিব ~  ২৭\১১\২০২০ ~  মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২১৬  

পশুত্বে পদার্পণ | কবিতা | সামি আল সাকিব

Image
❑ অনেক অনেক আগে ছেলে কিংবা মেয়ে হওয়ার আগে নারী কিংবা পুরুষ হওয়ার আগে আবাল কিংবা বৃদ্ধ হওয়ার আগে আমরা যখন শিশু ছিলাম আমরা তখন'ই মানুষ ছিলাম তারপর মানুষ হওয়ার জন্য যখন  আমরা শৈশব ছেড়ে কুঁজো হতে শুরু করলাম লম্বা আর মোটা হওয়ার জন্য লম্ফঝম্প শুরু করলাম প্রাণ-প্রকৃতি বশে আনলাম ঘরে জ্বালিয়ে খেতে শিখলাম জঙ্গল-মঙ্গল, মাংস আর হৃদয় দল ভারী করে ভোঁতা হতে শিখলাম নপুংসক পদবি লাগালাম, মানুষ আমাদের ষোলকলা ততদিনে পূর্ণ হয়েছে আমরা মূলত পশুত্বে পদার্পণ করেছি সফলভাবে।                                  --- ~ “ পশুত্বে পদার্পণ ” ~ সামি আল সাকিব ~ ০৬\০১\২০২১ ~ মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২১৬    

রূপসা-জয়ী | কবিতা | সামি আল সাকিব

Image
রূপসা পাড়ের মেয়ে কিংবা প্রিয় জয়িতা, কেমন আছেন,কোথায় আছেন কিংবা এখন                                                আপনার মন                                               করছে কেমন? পত্র দেবেন; রূপসা জলে ভাসিয়ে দেবেন, উড়িয়ে দেবেন আকাশ জুড়ে। রূপসা জলে ভেসে কিংবা হাওয়ার আবেশে চিঠিখানি পাবো আমি; আমি এক ছিন্নমস্তা চণ্ডী, অযাচিত যাযাবর পৃথিবীর পথ ধরে হেঁটে চলা উড়নচণ্ডী খেচর। পত্র দেবেন; পত্রগুলো হাতে পেলে ভাবগুলো সব পত্রে মেলে নদীর জলে ভাসিয়ে দেবো,উড়িয়ে দেবো মেঘের দলে; ধরতে গিয়ে খুঁজলে পাবেন অ-প্রেমিকের পূর্ণ প্রেম চাইলে পারেন উড়িয়ে দিতে, জড়িয়ে নিতে'ও চাইলে পারেন ইচ্ছে যদি জাগে, নীলপদ্ম জড়িয়ে দিলাম রূপসা জলে, মেঘের দলে, অ-প্রেমিকের চিঠির খাম। আপনার যত নীলপদ্ম,জড়িয়ে নেবেন তার'সাথে পূর্ণ প্রেমের পরের যা, ফুরাবে না এই বেলাতে, তারচে বেশি রইলো তোলা; পত্র পেলে রওনা দেবো পত্র পেলে সাত বাজারের বেচাকেনা চুকিয়ে দেবো। পত্র পেলে এই বেলাতে খানিক না'হয় কবি'ই হবো না বলা এক অলক্ষুণে খানিক ঘোরের মাতাল হবো না দেখা ঐ কল্পলোকেই আমরা যেন প্রাণ জুড়াবো আপনি যদি আসেন, একটা জীবন - সমাজ হবো পত্র যদি দে

বুক রিভিউ: আঙ্গারধানি | কিঙ্কর আহ্সান

Image
•  পাঠ-অনুভূতি : আঙ্গারধানি। যে পাত্রে আগুনের ফুলকি, জলন্ত কয়লা রাখা হয়। আমাদের হৃদয়'টাও এক একটা আঙ্গারধানির মতোন। সেখানে আমরা খুব সযত্ন পুষে রাখি আমাদের সুখ-দুঃখ, পাওয়া-না পাওয়া আর যতকিছু আমাদের পোড়ায়, আমাদের ফুরায় - সব। আলগী নদীর তীরবর্তী এক গ্রাম। এই গ্রামের শাশ্বত এক পরিবারের সর্ব-কণিষ্ঠ সন্তান পারুলকে একদিন বাড়ির পেছনে আঁধারে ঢাকা কবরস্থানে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সাপের কামড়ে তার মৃত্যু হয়েছে। এই ছোটবোনটি তাদের তিন ভাইবোনের মাঝে সবার বড়, ভাইজানের খুব আদরের। তার মৃত্যুর খবরে আট বছর ধরে বাড়ি ছেড়ে পালানো ভাইজান হঠাৎ ফিরে আসে। আর আসে নিশা আপা। লেখকের এবং একইসাথে লেখকের বড় ভাই যার প্রেমে পড়ে গেছিলো, লেখক বয়সে বেশ ছোট বলে পাত্তা না পাওয়া, মা মরা তাদের অসহায় এবং একইসাথে সহোদর খালাতো বোনের। আর আছে কমলেশ, লেখকের বাল্যবন্ধু, মাটির মায়ায় বিদ্ধ এক শাশ্বত পল্লিগাঁয়ের মানুষ। ভাইজানের বাড়ি ফেরায় অনেক অনেক প্রতীক্ষার অবসান হয়, শুরু হয় এক নতুন লড়াই। এ লড়াইটা মনস্তাত্ত্বিক। ভাইজান প্রতিনিয়তই কিছু লুকিয়ে যাচ্ছেন, অনেক অনেককিছুই লুকিয়ে রাখছেন নিজের কাছে। এদিকে সদা উচ্ছ্বল নিশা আপাও ভাইজানকে পেয়েও

মহাকাল-পাপী | অ-কবিতা | সামি আল সাকিব

Image
আপনি ব্যস্ত, আকারে না হলেও জানিয়েছেন ইঙ্গিতে; আমি প্রহর গুনি এক,দুই,তিন....এক-কোটি এক, এক-কোটি দুই.. আপনার ব্যস্ততা ফুরোয় না, আমার প্রহরের হিসেব থামে না; জানেন তো, আমি বড্ড অলস, বদমেজাজি, অপেক্ষার ধার ধারি না, জড়াই না প্রহরের হিসেবে। হঠাৎ'ই যেমন ঝড় এসে গুড়িয়ে দেয় পুরো জনপদ, সভ্যতার মুখোশ, একদিন শুভ সকালে আপনি তেমনি হানা দিয়েছেন হৃদয়ে, ঝড়ের তছনছ শেষে অসহায় গ্রামবাসী— যেমন বৃথাদৃষ্টি নিয়ে আকাশের পানে চায়, আমিও তেমনি করে বদলে গেছি; কেবল'ই প্রহর গুণি ঝড় শেষে আসা সরকারি ত্রাণ হোক আপনার দিদারের, অথচ আপনার দু'দণ্ড অবসর হয় না-অবসরহীনতা জানাবার। মৃতপথযাত্রীর মতো করে তসবি জপি প্রহরের, প্রহর রাঙা আপনার দিদার হয়ে আসুক মালাকাল মউত, ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁইয়ে শেষবারের মতো পড়ে নিই প্রেমের কলমা— আমি আপনাকে ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভা..লো...বা....সি..... অথচ বলা হয়ে ওঠে না, যেমন করে পাপী বান্দার মরার সময়ে নসিব হয় না কালেমা, ঠিক তেমনি করে'ই; আমার প্রহর ফুরোয় না, যেন মহাকাল; পাড়ি দি'ই কালের শেষে অফুরান মহাকাল, দ্ব্যর্থহীন ব্যর্থ ছুটে চলা'র নিয়তি, হাবিয়া'য় বসে তসবি জপি প

অ-কবিতা: দশমিক | সামি আল সাকিব

Image
আমার বারোটা বেজে গেছে ঘড়ির কাটায় সুবহে সাদিক অথচ আম্মা জানেন আমি তার অবাধ্য খোকা আব্বা জানেন ছেলে তার হাত ফসকে গেছে স্ব-জনরা জানেন- ইঁচড়েপাকা অথচ আমার বারোটা বেজে গেছে সামাজিকেরা জানে আমি অসামাজিক সন্নাসিরা জানে আমি খাস সামাজিক সমাজপতিরা জানে আমি এ'দুয়ের সেতুবন্ধ অথচ আমার বারোটা বেজে গেছে নাস্তিক জানে আমি উগ্র ধার্মিক ধার্মিক জানে আমি নব নাস্তিক ঈশ্বর জানেন আমি তার আরাধনার ধার ধারি না আমি মানি, ঈশ্বর আমারে শোনেন না অথচ প্রতিবারেই ন্যায়ের মিজানে অন্যায় মাপা হয় তাই আর কি হবে! আমার বারোটা বেজে গেছে শিক্ষক জানেন আমি ফাঁকিবাজ আমি মানি, পরিশ্রমী দুর্ভাগা দিনশেষে ভাগ্য ভুলায় 'সব দোষ আমার' বাস্তবতা কেবলই ফাঁকা বুলিদের আর কি হবে! আমার তো বারোটা বেজে গেছে আমার হিসেবে দুই যোগ দুই সমান চার জাগতিক বলে, ২.৫ যোগ ১.৫ সমান চার দশমিকের হিসেব মাথায় ধরে না হিসেবটাও তাই আর মেলে না, মিলে আর কি'ই বা হবে? আমার তো বারোটা বেজেই গেছে।                                        ▫▫▫▫▫ ~ ' দশমিক ' ~ সামি আল সাকিব ~ মিরপুর-১৪,ঢাকা-১২১৬ ~ ১১/০৯/২০২০

কবিতা: তুমি কাঁদো | সামি আল সাকিব

Image
আমি চাই তুমি কাঁদো, কাঁদতেই থাকো চোখ হয়ে যাক বর্ষার ফারাক্কা বাঁধ, মুখ হয়ে যাক নায়াগ্রার প্রপাত, চিরায়ত রমণী, সব হারিয়ে-পাওয়ার পরের কান্নায় মেতে থাকো, আমি চাই তুমি কাঁদো, কাঁদতেই থাকো; আমাকে পেয়ে ঈদ আসুক তোমার হিমশীতল হৃদয়ে, ওষ্ঠে অঙ্গুরি ছুঁয়ে যাক; ছুটে এসে দুমদাম কিল-গাট্টা মেরে মুখ লুকিয়ে নাও আমার বুকে, কান পেতে রও ঠিক হৃদয়ে, ধক-ধক-ধক-ধক, তোমার চোখের জল,কাজলে ভিজে যাক আমার প্রিয় শার্ট, তোমার মুখের প্রসাধনী অযাচিত লেপে যাক; বৃষ্টির ছোঁয়ায় জেগে ওঠা চারণভূমি হয়ে উঠুক আমাদের হৃদয়, হৃদয় বলে যাক - তোমরা এমনই থাকো, আমি চাই তুমি কাঁদো, কাঁদতেই থাকো।                                     --- ~ ' তুমি কাঁদো ' ~  সামি আল সাকিব ~  ২৯-০৯-২০২০ ~  মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২১৬  

কবিতা: চুরুটের তেষ্টা | সামি আল সাকিব

Image
আজ এক-কোটি বছর আমি চুরুটে তেষ্টা মেটাইনি, ধূম্র শলাকায় আগুন জ্বালিয়ে কেবলই মুখ,দাঁত খিচে টেনে গেছি আর কটমট করে তাল মিলিয়েছি খিস্তি খেউড়ে, বলে গেছি আমি আছি। অথচ বেড়িয়েছি চুরুটের তেষ্টা মেটাবো বলে, পাইনি; যেমন করে প্রেয়সীর ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেখা, অথবা উরু সন্ধি, বক্ষ ঢল, আর নরম শেতাঙ্গ ছুঁতে পারেনি শিশ্ন; শিৎকার, চিৎকার, নেহাত'ই নিরবতা শোনবার ক্ষমতা হয়নি কারো, অথচ বেড়িয়েছি চুরুটের তেষ্টা মেটাবার ছলে, পাইনি। যেমন করে প্রেয়সী হয়ে গেছে রমণী; আদুরে, সাধারণ বাঙালি গৃহিণী, মুখ লুকিয়ে,গাল ফুলিয়ে বসে থাকা কোলাব্যাঙ; অথচ আমি কেবল সঙ্গীনী চেয়েছি, আত্মার সঙ্গীনী; ঘরোয়া-রমণীর দায় নিতে সাধ পাইনি, তবু দিনশেষে রমণী হয়ে'ই এলো সে-তারা যেমন করে চুরুটের নেশায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা টেনে গেছি কেবলই ধূম্র শলাকা, তেষ্টা মেটেনি। নাক,মুখ খিঁচে মেতেছি খিস্তি-খেউড়ে, ধোয়াঞ্জলী দিয়েছি কাল-আকাশ, প্রেয়সীর বিকেল, অস্বস্তিকর মধ্যরাত; অথচ বেড়িয়েছিলাম চুরুটের তেষ্টা মেটাবার ছলে, না চুরুট না প্রেয়সী, আসেনি কেউ। তেষ্টায় হৃদয় শুকিয়ে কাঠ, কাঠের আগুনে চড়ে ঈশ্বর বলেন 'সব দায় আমার', যেমনটা হয়ে গেছে প

বুক রিভিউ: যাপিত জীবন - সেলিনা হোসেন

Image
বইয়ের প্রচ্ছদ* ◾ বই-পর্যালোচনা :           ( ১ )  ১৯৪৭ সাল। ভারতবর্ষ ভেঙে ধর্মভিত্তিক দুটো নতুন রাষ্ট্র হয়। আর হয় দাঙ্গা। রক্তক্ষয়ী হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার শিকার হয়ে তিল তিল করে গড়ে তোলা সাজানো-গোছানো জীবন রাতের আঁধারে সদ্য স্বাধীন দেশ পূর্ব পাকিস্তানে পালিয়ে আসেন স্থানীয় স্কুল শিক্ষক, নিসর্গবেদী মাঝ বয়সী সোহরাব আলি, স্ত্রী আফসানা খাতুন, পুত্রত্রয় মারুফ,জাফর এবং দীপু। বন্ধু দীপেনের আত্মীয়তার সূত্রে খুব একটা ঝামেলা ছাড়াই মাথা গুঁজবার মতো বেশ ভালো একটা ঠাই হয় তাদের। বিরাট আঙিনা, বাগান আর ছায়াঘেরা কলকাকলি মুখর এক দ্বীতল বনেদি বাড়ি। সবুজে ঘেরা বাড়িটাই হয়ে ওঠে তাদের নতুন ঠিকানা। তারা আবার নতুন করে তাদের সংসার,জীবন,বাড়ি আর স্বপ্ন সাজাবার স্বপ্নে বিভোর হয়ে ওঠেন। বড়ছেলে মারুফ যোগ দেয় চাকুরিতে। মেজোছেলে জাফর ভর্তি হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর ছোটছেলে দীপু ভর্তি হয় স্কুলে। সোহরাব আলি আবার ফিরে যেতে থাকেন তার পুরোনো জীবনে, নিসর্গবেদী, শখের হেকিম, কাজের মাধ্যমে গরিব দুঃখীর উপকারে নিবেদিতাপ্রাণ জীবনে, তার গাছগাছালির সংসারে। আর আফসানা খাতুন ভীত অথচ দৃঢ় হাতে আগলে রাখেন তার পরিবার, তার সংসারকে

নীলপদ্ম | অ-কবিতা | সামি আল সাকিব

Image
আমার হাতে গোলাপ 'নীলপদ্ম' তোমায় দিলাম আমার হাতে গোলাপ প্রেমপত্র তোমায় দিলাম আমার হাতে প্রেমপত্র  পত্রে বোবা প্রেম দিলাম আমার হাতে গোলাপ গোলাপজুড়ে স্বপ্ন দিলাম আমার হাতে ঘোর ঘোরের খানিক অমৃত দিলাম আমার হাতে গোলাপ গোলাপটাকে তোমায় দিলাম; তোমার হাতে নীলপদ্ম অব্যক্তিরা বিলাপ করে তোমার হাতে নীলপদ্ম  পদ্মগুলো হেলায় ঝরে তোমার হাতে গোলাপ নীলপদ্ম পঁচে মরে তোমার হাতে গোলাপ গোলাপটাতে দুঃখ ঝরে।                 --- - ' নীলপদ্ম ' -  সামি আল সাকিব -  ১৭/১২/২০১৯ -  মিরপুর-১৪, ঢাকা-১২১৬